কোরআনে হাফেজের মা - বাবার মর্যাদা

 


কোরআনে হাফেজের মা - বাবার মর্যাদা

মুহাম্মদ নিজামুল হক

পবিত্র কোরআন পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাবান গ্রন্থ। এটি যে পড়বে, বুকে ধারণ করবে এবং  জীবনের আলােকবর্তিকা হিসেবে গ্রহণ করবে,  প্রত্যেককেই স্তর অনুপাতে মর্যাদা দেওয়া হবে।  মর্যাদাবান এ গ্রন্থের উসিলায় আল্লাহ মানুষের  মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। যে তেলাওয়াত করে তারও  মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং যে মা-বাবার উসিলায়  মানুষ কোরআন হিফজের সুযোগ লাভ করেছে  তাদেরও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

হজরত ওমর  (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন,
‘আল্লাহ তায়ালা এই কোরআনের কারণে  অনেক মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং অনেক মানুষের মর্যাদা ক্ষুন্ন করেন। অর্থাৎ যারা কোরআনের ওপর আমূল করে আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেন আর যারা আমল করে না তাদেরকে অপমানিত করেন।'
(মুসলিম : ১৮৯৭)

কোরআন কারিম অনুযায়ী আমল ওই ব্যক্তিরই ভাগ্যে জোটে, যে তা শিক্ষালাভ করে। আর অনেক হাদিস দ্বারা সমর্থিত, কোরআন শিক্ষা করা, হিফজ করা,  অর্থজ্ঞান আয়ত্ত করাও একটি স্বতন্ত্র আমল। মা-বাবা মানুষের অমূল্য সম্পদ। যার মূল্য পরিশােধ করে শেষ করা যাবে না। পৃথিবীতে মা-বাবার চেয়ে বেশি হিতাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তি দ্বিতীয় আর কেউ নেই। শৈশবে সন্তানের পড়ালেখা ও  বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে মা-বাবার যেমন করণীয়। রয়েছে, তেমনি মা-বাবার বৃদ্ধ বয়সে কিংবা অসুস্থ হলে তাদের জন্য সন্তানের অনেক  করণীয় রয়েছে। তাদের ইন্তেকালের পরও সন্তানের অনেকগুলাে করণীয় বিষয় থাকে। মৃত্যুর পর মানুষের নিজের আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির দুনিয়ায় রেখে যাওয়া সুসন্তানের দোয়া ও সদকায়ে জারিয়ার সওয়াবের দরজা বন্ধ হয় না। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের সন্তান কোরআন এবং তেলাওয়াত করবে, তাদের মা-বাবাকে হাশরের দিন নূরের টুপি পরানাে হবে।

হজরত মুয়াজ জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করেছে এবং তাতে যা আছে সে অনুযায়ী আমল করেছে, তা হলে তার মা-বাবাকে হাশরের মাঠে একটি নূরের মুকুট পরানাে হবে। যদি সূর্য তােমাদের ঘরে প্রবেশ করত, তা হলে ওই সূর্যের আলাের চেয়ে ওই মুকুটের আলাে বেশি উজ্জ্বল হবে। এখন তােমরা চিন্তা করাে, যে ব্যক্তি কোরআনের নির্দেশ অনুসারে আমল করে, তার মর্যাদা ও অবস্থান কত উত্তম হবে?'
  (আবু দাউদ : ১৪৫৩)

যারা কোরআন তেলাওয়াতকারী তাদেরকে আল্লাহর পরিবারভুক্ত বলে বিভিন্ন হাদিসে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। হাশরের মাঠে আল্লাহ তাদের সুপারিশ কবুল করবেন। কোরআন তেলাওয়াতকারীর মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজনকে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।

হজরত আলি ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করে এবং তা হিফজ অর্থাৎ মুখস্থ করে অতঃপর কোরআন যা হালাল করেছে সে নিজের জন্য তা হালাল করে এবং কোরআন যা হারাম করেছে সে নিজের জন্য তা হারাম করে, তবে কাল কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং নিজ পরিবারের এমন দশজনের জন্য তার সুপারিশ কবুল করবেন, যাদের জন্য জাহান্নাম আবশ্যক হয়ে গিয়েছিল।'
  (তিরমিজি : ৫/২৯০৫)


আমি অবশেষে একটি কথা বলে নিতে চাই তা হলো, আমিও আপনাদের মতোই একজন সাধারণ মানুষ তাই আমারও ভুল থাকতে পারে। তাই আমার লেখায় যদি কোথাও কোনো ভুল পান, হোক সেটা বানান ভুল কিংবা আমার কথা বা মতবাদে কোনো ভুল তাহলে সেটা দয়া করে ক্ষমার চোখে দেখবেন এবং আমার সেই ভুলটাকে ধরিয়ে দিবেন যেনো আমি পরবর্তীতে ভুলটা শুধরে নিতে পারি।

No comments

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.