ইসলামে নারীদের নেতৃত্ব হালাল না কি হারাম কি বলে কোরআন এবং সহিহ হাদিস...?

 ইসলামে নারীদের নেতৃত্ব হালাল না কি হারাম কি বলে কোরআন এবং সহিহ হাদিস...?



আমি আমার লেখা শুরু করার আগেই বলে নিই আমি একজন মানুষ তাই আমারও ভুল থাকতে পারে। তাই আমার লেখায় যদি কোথাও কোনো ভুল পান, হোক সেটা বানান ভুল কিংবা আমার কথা বা মতবাদে কোনো ভুল তাহলে সেটা দয়া করে ক্ষমার চোখে দেখবেন এবং আমার সেই ভুলটাকে ধরিয়ে দিবেন যেনো আমি পরবর্তীতে ভুলটা শুধরে নিতে পারি।


পবিত্র কুরআনে আমার জানা মতে এমন কোনো কথা নেই যেটা বলছে একজন মহিলা রাষ্ট্রের প্রধান হতে পারবেন না। তবে এমন বেশকিছু হাদিস আছে যেমন একটা হাদিস বলছে,
আবূ বাক্‌রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শ্রুত একটি বাণীর দ্বারা আল্লাহ জঙ্গে জামালের (উষ্ট্রের যুদ্ধ) দিন আমার মহা উপকার করেছেন, যে সময় আমি সাহাবায়ে কিরামের সঙ্গে মিলিত হয়ে জামাল যুদ্ধে শারীক হতে প্রায় প্রস্তুত হয়েছিলাম। আবূ বাক্‌রাহ (রাঃ) বলেন, সে বাণীটি হল, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এ খবর পৌঁছল যে, পারস্যবাসী কিসরা কন্যাকে তাদের বাদশাহ মনোনীত করেছেন, তখন তিনি বললেন, সে জাতি কক্ষণো সফল হবেনা স্ত্রীলোক যাদের প্রশাসক হয়।
[ সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৪২৫, সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭০৯৯ ]
কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন যে এটা বলা হয়েছিলো একটা বিশেষ সময়ের একটা বিশেষ ঘটনাকে উদ্দেশ্য করে। আর সে সময় পারস্য দেশের নেতা ছিলো তাদের রানী। তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা বলে না এখানে আসলে সবার কথাই বলা হয়েছে।
তাহলে আসুন দেখি যে ইসলাম ধর্মে একজন মহিলা রাষ্ট্র প্রধান হতে পারবেন কিনা?
যদি একজন মহিলা রাষ্ট্র প্রধান হন কোনো ইসলামিক দেশে তাকে হয়তো নামাজের সময় ইমামতীও করতে হতে পারে। আর যদি একজন মহিলা জামায়াতে নামাজ পরায় ইমামতী করেন, আর নামাজে আমরা বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গি করি যেমনঃ কালাম, রুকু, সিজদা, দাড়ানো, নতজানু আর উপুর হউয়া। যদি পুরুষদের সামনে একজন মহিলা এগুলো করে নামাজের সময়, আমি নিশ্চিত এতে নামাজের অসুবিধা হবে।
যদি সেই মহিলা আমাদের দেশের মতো বর্তমানের কোনো দেশের রাষ্ট্র প্রধানহন, প্রায়ই দেখা যাবে সেই রাষ্ট্র প্রধান বিভিন্ন মিটিং করছেন অন্য দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সাথে, যারা হতে পারে পুরুষ। আর মাঝেমধ্যেই তারা ক্লোজ-জোর মিটিং করে, যেখানে অন্যকেউ ঢুকতে পারে না। যদি একজন মহিলা আরেক জন পুরুষের সঙ্গে ক্লোজ-জোর মিটিং করে ইসলাম এটার অনুমতি দেয়না। ইসলাম বলে যে একজন মহিলা কোনো পরপুরুষের সাথে একা থাকতে পারবেন না, মিটিং করতে পারেবে না। ইসলাম পুরুষ ও নারীর অবাদ মেলামেশার অনুমতি দেয়না। একজন রাষ্ট্র প্রধানের ছবি বিভিন্ন সময়ে প্রচার করা হয় ভিডিও শুটিং, ফোটোগ্রাফী খুব কাছথেকে ক্যামেরা ধরা হয় সেখানে অন্য রাষ্ট্র প্রধানো থাকতে পারে অন্য পুরুষ লোকও থাকতে পারে। তখন এই মহিলা রাষ্ট্র প্রধান যেকেউ হতে পারে, ছবিতে দেখবেন তারা অনেক পুরুষের সাথে তারা হেন্ডসেক করছেন। ইসলাম পুরুষ ও নারীর এধরণের মেলামেশাকে অনুমতি দেয়না। রাষ্ট্র প্রধান মাঝেমধ্যেই দেশের সাধারণ মানুষদের সাথে সাক্ষাৎ করেন যদি মহিলা রাষ্ট্র প্রধানহন তাহলে সাধারণ মানুষের সাথে এধরণের সাক্ষাৎ করা তার জন্যে কঠিন হয়ে যাবে।
আর বিজ্ঞান আমাদের বলে যে মহিলাদের রজুস্রাবের সময় কালে মানষিকতা আর ব্যবহারে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। কারণ এসময় তাদের সেক্স হরমোন গুলো বের হয়ে যায়। আর তিনি রাষ্ট্র প্রধান হলে এই ধরনের পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে তার সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও বিজ্ঞান আমাদেরকে বলে যে মহিলারা তারা পুরুষদের তুলনায় কথাবার্তা বলায় বেশি পারদর্শী। আর পুরুষরা তাদের রয়েছে বিশেষ কিছু মানসিক ক্ষমতা বিশেষ ক্ষমতা মানে পুরুষরা বেশি কল্পনা করতে পারে যে ভবিষ্যতে কি হবে ভবিষ্যতের
ঘটলা গুলো কল্পনা করতে পারে আর রাষ্ট্র প্রধান হলে এই বিশেষ মানসিক ক্ষমতা গুলোর প্রয়োজন রয়েছে। একজন মহিলা সে একজন পুরুষে চাইতে কথাবার্তা বলায় বেশি পারদর্শী যেটা একজন মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজন। একজন মহিলা তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেন, তখন তার কয়েক মাস বিশ্রামের প্রয়োজন হয় সেই সময় কে সেই রাষ্ট্রের দেখা শোনা করবে..? তার সন্তান থাকতে পারে, মা হিসেবে এই দায়িত্বটা খুবই ইনপরটেন্ট আর এই কাজটা একজন পুরুষের জন্য সুবিধাজনক। কারণঃ তিনি একই সাথে সন্তানের বাবা আর রাষ্ট্র প্রধান হতে পারেন। কিন্তু একজন মহিলার পক্ষে একই সাথে মা আর রাষ্ট্র প্রধান হওয়াটা সুবিধাজনক নয়। আমিও সেই সব বিশেষজ্ঞদের মতোই মহিলাদের কোনো দেশের রাষ্ট্র প্রধান হওয়া উচিৎ নয়। কিন্তু, তার মানে এই না যে মহিলারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ নিতে পারবেন না। আমি আমার লেকচারে আগেও বলাছি ভোটাধিকার আছে, আইনপ্রণয়নের সময় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি উম্মে সালমা (রাঃ) তিনি নবীজীকে সমর্থন আর নির্দেশনা দিয়েছেন যে সময় মুসলিম সম্প্রদায় একত্রিত ছিলো না। তিনি তখন নবীজিকে সমর্থন আর নির্দেশনা দিয়েছেন। আর আমরা জানি যদিও প্রাইমিনিস্টার অথবা প্রেসিডেন্ট তিনিই হন দেশের প্রধান ব্যাক্তি কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়  যে পিএ আর সেক্রেটারিরাই বিভিন্ন সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে  থাকেন। তাহলে এভাবে একজন মহিলা দেশের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

   ----- ডাঃ জাকির নায়েক

No comments

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.